ডায়াবেটিসের ঔষধে ক্যানসারের উপাদানঃ

. ডায়াবেটিসের ঔষধে ক্যানসারের উপাদানঃ
ডায়াবেটিসের ওষুধ মেটফরমিনে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক এন-নাইট্রোসোডিমিথাইলামিনের (এনডিএমএ) বিপজ্জনক মাত্রার উপস্থিতির আশঙ্কায় ওষুধটি নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ। ডায়াবেটিসের এ ওষুধে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক উপাদান থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। মেটফরমিনে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় এনডিএমএ উপস্থিতি পাওয়ার পর সিঙ্গাপুরের বাজার থেকে এরইমধ্যে ওষুধটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।

গ্লুকোফেইজ নামের মেটফরমিন গ্রুপের একই ক্যাটাগরির ওষুধটি যুক্তরাজ্যের মেডিসিনস এন্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি (এমএইচআরএ) ব্রিটেনের বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা ভাবছে।

যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ), হেলথ কানাডা এবং ইউরোপীয় মেডিসিনস এজেন্সি ডায়াবেটিসের এই ওষুধটিতে এনডিএমএর উপস্থিতি এবং ঝুঁকি নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছে। তবে ওষুধটি এখনই বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে কিনা সে ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।

এফডিএর মুখপাত্র জেরেমি কান বলেছেন, ‘সংস্থাটি মেটফরমিন পরীক্ষার শুরুর পর্যায়ে রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক গ্রহণযোগ্য মাত্রা তথা ৯৬ ন্যানোগ্রামের চেয়ে মেটফরমিনে এনডিএমএ বেশি কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়।’

তিনি আরও বলেন, ডায়াবেটিস একটি গুরুতর অবস্থা। তাই যেসব রোগী মেটফর্মিন গ্রহণ করেন, তাদের চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রথমে কথা না বলে সেবন বন্ধ করা উচিত হবে না।

এদিকে সিঙ্গাপুরের দৈনিক দ্য স্ট্রেইট টাইমস বলছে, গত সপ্তাহে সিঙ্গাপুরের বাজারে মেটফরমিন গ্রুপের ৪৬ ধরনের ওষুধের মধ্যে তিনটিতে বিপজ্জনক মাত্রায় এনডিএমএ পাওয়া যায়। দেশটির বাজার থেকে গ্লুসিয়েন্ট এক্সআর (৫০০ এমজি) ও মিজুমেট (৭৫০ ও ১০০০ এমজি) প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।

এনডিএমএ নামের রাসায়নিক এই উপাদান মানুষের দেহে ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কীটনাশক, ক্লোরিন ও শিল্প প্রক্রিয়া থেকে প্রাপ্ত একটি রাসায়নিক পদার্থ হচ্ছে এনডিএমএ। পানি, মাংস, দুগ্ধজাত খাবার ও শাকসবজিসহ আরো বিভিন্ন ধরনের খাবারে স্বল্প মাত্রায় এনডিএমএ উপস্থিতি থাকে। স্বল্পমাত্রার এনডিএমএ মানব দেহে বড় ধরনের কোনো সমস্যা তৈরি করে না।

ডায়াবেটিসের রোগীদের স্বাভাবিক অন্যান্য ওষুধ সেবন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নির্বাচিত একটি ওষুধ মেটফরমিন। এটি ইনসুলিন ব্যবহার করে রক্তে সুগারের পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রায় নামিয়ে আনতে সহায়তা করে।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় বহুল সেবনকৃত জ্যানট্যাক ট্যাবলেটে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী এই এনডিএমএ উপস্থিতির জেরে বিশ্ববাজার থেকে ওষুধটি তুলে নেয়া হয়। সেই সময় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা জ্যানট্যাক ট্যাবলেটে ক্যান্সারের উপাদানের উপস্থিতির বিষয়ে তদন্ত শুরুর পর বিশ্বের শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারী ব্রিটিশ সংস্থা গ্ল্যাক্সো স্মিথ ক্লাইন (জিএসকে) ওষুধটি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতের বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেয়।

একই আশঙ্কায় বাংলাদেশেও একই গ্রুপের রেনিটিডিন উৎপাদন ও বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়।

মন্তব্যসমূহ

All posts

ঘুমের মধ্যে পায়ে টান লাগার কারন ও প্রতিকার

দাঁত ব্যথার কারন ও প্রতিকার

জেনে নিন কোন ড্রাগের সাথে কোন ড্রাগ নেয়া ঠিক না